মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২২

বদরের যুদ্ধ মুহাউম্মদ

 বদরের যুদ্ধ রমজান মাসেই সংঘটিত হয়েছিলো, তাই রমজান মাস এলেই বিভিন্ন মিডিয়া ব্যবহার করে মুসলমানরা বদরের যুদ্ধ সম্পর্কে নানা মিথ্যা কথা প্রচার করে, বদরের যুদ্ধ সম্পর্কে প্রকৃত সত্য জানতে হলে পড়ুন নিচের এই প্রবন্ধটি-


বদর যুদ্ধের কারণ এবং এই যুদ্ধে মুসলমানদের জয় কিভাবে সম্ভব হয়েছিলো ?


মুহম্মদের মদীনায় হিজরতের পর প্রথম ৬ মাস মক্কার কোরাইশদের বেশ শান্তিতেই কেটেছে, কিন্তু তারপর থেকে বাড়তে শুরু করে শত্রুতা; এই শত্রুতার পেছনে কোরাইশদের কোনো উসকানি ছিলো কিনা, তা এই পোস্ট পড়তে পড়তে আপনারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। কারণ, ইতিহাস বর্ণনা করার আগেই আমি যদি সিদ্ধান্ত দিই, তাহলে অনেকেই মনে করতে পারে যে, আমি নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনা বর্ণনা না করে পক্ষপাত দুষ্ট হয়ে করেছি, এতে শুরুতেই মুসলমানদের গায়ের এলার্জি বেড়ে যেতে পারে।


যা হোক, মক্কা থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর থেকেই মুহম্মদের গা জ্বলছিলো, কোরাইশদেরকে শায়েস্তা না করা পর্যন্ত তার মনে শান্তি ছিলো না। কিন্তু তখনই তার পক্ষে মক্কা আক্রমন করে দখল করাও সম্ভব ছিলো না; কারণ, তখনও মুসলমানদের সংখ্যা মাত্র কয়েকশত। এজন্যই মুহম্মদ একটি সুদূরপ্রসারী প্ল্যান করে, আর তা হলো মুসলমানদের দ্বিধাহীন আনুগত্য আদায় এবং তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি ক’রে নিজের শক্তি বৃদ্ধি করা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন ছিলো এমন একটি উপায় আবিস্কার করা, যাতে মুসলমানদের অর্থাভাব দূর হয় এবং একই সাথে কোরাইশদের ক্ষতি করা সম্ভব হয়। এই সমস্যা সমাধানেই মুহম্মদ বিধান দেয়- যারা এখনও ইসলাম গ্রহন করে নি, তারা মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু, তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা হারাম এবং জিহাদের মাধ্যমে তাদের ধনসম্পত্তি লুঠ করে খাওয়া বৈধ। আমার এই কথার প্রমান আছে, নিচের এই হাদিসে-


“ইসলাম প্রবর্তনের আগে লুঠের মাল ভোগ করা বৈধ ছিলো না, কিন্তু আল্লা আমাদের দুর্দশা ও দুর্বলতা দেখে লুটের মাল ভোগ করা বৈধ করেছেন।”।- (মুসলিম- ১৯/ ৪৩২৭)


অন্যের সম্পত্তি লুঠপাট করে খাওয়ার এই বিধান মদীনা এবং তার আশেপাশের লোকদের মধ্যে এমনভাবে সাড়া ফেললো যে, দলে দলে লোক মুসলমান হতে লাগলো আর জিহাদের নামে অস্ত্রপাতি নিয়ে কাফের নিধনে মুহম্মদের সঙ্গ দিতে লাগলো। এই গনিমতে মালের লোভ সামলাতে না পেরে এক লোক কী করেছিলো, দেখুন নিচের এই হাদিসে-


“একবার একজন লোক মুহম্মদের কাছে এসে বললো যে, সে জিহাদে যোগ দিয়ে লুটের মালের ভাগ পেতে ইচ্ছুক। মুহম্মদ তাকে জিজ্ঞেস করলো, তুমি কি আল্লাহ ও তার রাসূলে বিশ্বাস করো ? লোকটি জবাব দিলো, না । মুহম্মদ তখন তাকে বললো, আগে ভুল রাস্তা ঠিক করো।”- (মুসলিম শরীফ, ৪৪৭২)


যা হোক, মুহম্মদ প্রথম টার্গেট ছিলো মক্কার কোরাইশ, যারা তাকে মক্কা থেকে বিতাড়িত করেছিলো। এই কোরাইশরা, বছরে বেশ কয়েকবার বাণিজ্য যাত্রা করতো এবং তাদের এক একটি বাণিজ্য কাফেলায় বিনিয়োগের পরিমান ছিলো তখনকার আমলেই কয়েকশত কোটি টাকা। এটা ছিলো মুহম্মদের জন্য একটা পারফেক্ট ব্যাপার; কারণ, কোরাইশদের বাণিজ্য কাফেলায় হামলা করে লুঠপাট ও খুন করতে পারলে একই সাথে প্রতিশোধ নেওয়া যাবে আবার আর্থিকভাবে লাভবান হওয়াও যাবে। আবার এই বাণিজ্য কাফেলার রাস্তাও ছিলো মদীনার পাশ দিয়ে, ফলে সব মিলিয়ে মুহম্মদের জন্য তা ছিলো সোনায় সোহাগা।


মুহম্মদ এই বাণিজ্য কাফেলার উপর হামলার জন্য মুসলমানদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে থাকে, কিন্তু মুসলমান ছাড়া অন্য সব অমুসলিমই তো জন্মগতভাবে কিছু মানবিক গুন নিয়ে জন্মায়, যাদেরকে মুহম্মদ বাণিজ্য কাফেলায় হামলা করে খুন ও লুঠপাট করতে বলছে, তারা কিছুদিন আগেই তো ছিলো অমুসলিম, তাদের মধ্যেও এই গুনগুলো তো থাকবেই, তারা মুহম্মদের কথায় লাফ দিয়ে উঠে জিহাদের নামে খুন লুঠপাটে যাবে কেনো ? এই জিহাদে নিরুৎসাহিত মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করার জন্য মুহম্মদকে একের পর এক কোরানের আয়াত ডাউনলোড করতে হয় এবং সেই আয়াতগুলোতে সে বলে-


“তোমরা কি এমন লোকদের সাথে লড়াই করবে না... যারা রসূলকে দেশ হতে বহিষ্কার করার সংকল্প করেছিলো‍। ( কোরান - ৯/১৩)


তারপরও কোন ভাবান্তর না দেখে, মুহম্মদ আরো বলে-


"হে ঈমানদার লোকেরা, তোমাদের কী হয়েছে , তোমাদের যখন আল্লাহর পথে বের হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তখন তোমরা মাটি কামড়ে পড়ে থাকলে!”- (কোরান, ৯/৩৮)


“তোমাদেরকে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আর তোমাদের তা অসহ্য মনে হচ্ছে, হতে পারে কোনো জিনিস তোমাদের অসহ্য মনে হলো, অথচ তা ই তোমাদের জন্য কল্যানকর”। - (কোরান, ২/২১৬)


এখানে উল্লেখ্য যে এই কল্যান আসবে লুঠপাটের মাল থেকে।


“আল্লাহর পথে লড়াই করা কর্তব্য সেই সব লোকেরই যারা যারা পরকালের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবন বিক্রি করে দেয়। যারা আল্লাহর পথে লড়াই করবে কিংবা নিহত হবে বা বিজয়ী হবে, তাদেরকে আমি অবশ্যই বিরাট ফল দান করবো।”- (কোরান, ৪/৭৪)


এই ফল বেঁচে থাকলে ইহকালে লুঠপাটের মাল আর অমুসলিম নারীর দেহ, আর মরে গেলে আল্লার পতিতালয় বেহেশেত হুর ও গেলমানের সাথে সেক্স।

এতেও কাজ না হওয়ায় মুহম্মদ হুমকি দিয়ে বললো,


"তোমরা যদি যুদ্ধ যাত্রা না করো, তাহলে তোমাদেরকে পীড়াদায়ক শাস্তি প্রদান করা হবে।”- (কোরান, ৯/৩৯)


কিছু লোক তো জানতোই যে যুদ্ধে গেলে মৃত্যু হতে পারে, তাই তারা সব কিছু ছেড়ে যুদ্ধে যেতে ইচ্ছুক ছিলো না, তাদের জন্য মুহম্মদ বললো,


“যদি তোমাদের পিতা পুত্র, তোমাদের ভাই, তোমাদের স্ত্রীরা, ও তোমাদের আত্মীয় স্বজন এবং তোমাদের সেই ধন মাল যা তোমরা উপার্জন করেছো এবং সেই ব্যবসায়, যারা মন্দা হওয়াকে তোমরা ভয় করো, আর তোমাদের সেই ঘর, যাকে তোমরা খুবই পছন্দ করো, তোমাদের নিকট আল্লা ও তার রাসূল এবং আল্লার পথে জিহাদ করা অপেক্ষা প্রিয় হয়, তাহলে তোমরা অপেক্ষা করো, যতক্ষণ না আল্লা তার চুড়ান্ত ফায়সালা তোমাদের সামনে পেশ করে।” (কোরান- ৯/২৪)


এরপরও যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উদ্দেশ্যে মুহম্মদ বললো,


“যে সব মুসলমান কোনো অক্ষমতা ছাড়াই ঘরে বসে থাকে, আর যারা আল্লার পথে জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করে, এই উভয় ধরণের লোকের মর্যাদা এক নয়। আল্লাহতায়ালা বসে থাকা লোকেদের অপেক্ষা জান মাল দ্বারা জিহাদকারীদের মর্যাদা উচ্চে রেখেছেন।” - (কোরান, ৪/৯৫)


মুহম্মদ জিহাদের নির্দেশ দিলে কিছু লোক প্রথমে বলেছিলো, যদি আল্লা কোরানের মাধ্যমে সেরকম নির্দেশ দেয় তাহলে তারা জিহাদে যাবে, তার আগে নয়। কিন্তু তারা তো জানতো না যে, মুহম্মদের ইচ্ছা অনিচ্ছা অনুসারেই তার কাছে আল্লার বাণী আসে।


যা হোক, মুসলমানদেরকে জিহাদে উৎসাহিত ও বাধ্য করার জন্য মুহম্মদ যখন উপরের এই আয়াতগুলো ডাউন লোড করে, তারপরও সেই লোকগুলো জিহাদে যায় না দেখে মুহম্মদ আবার বলতে হলো,


“যারা ঈমান এনেছিলো তারা বলেছিলো যে, কোনো সূরা অবতীর্ণ করা হয় না কেনো যাতে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হবে। কিন্তু যখন একটি সুদৃঢ় সূরা অবতীর্ণ করা হলো যাতে যুদ্ধের উল্লেখ ছিলো, তখন তুমি দেখতে পেলে যে, যাদের দিলে রোগ ছিলো, তারা এমনভাবে তাকাচ্ছে, যেন কারো উপর মৃত্যু আচ্ছন্ন হয়ে এসেছে, তাদের প্রতি ধিক্কার”।- (কোরান, ৪৭/২০)


যা হোক, এরকম জিহাদের আয়াত আছে প্রায় ২০০ টা, সবগুলো এখানে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আমার পোস্টগুলো পড়তে থাকলে নিশ্চয় সেই আয়াত এবং সেগুলো অবতীর্ণ হওয়ার কারণ এবং তার ফলাফল জানতে পারবেন।


উপরে বর্ণিত ঐ আয়াতগুলোর মাধ্যমে মুহম্মদ মুসলমানদেরকে- একটি নীতিহীন, লোভী, লুণ্ঠনকারী, খুনি ও যোদ্ধা জাতিতে পরিণত করে এবং হিজরতের সপ্তম মাসে মুহম্মদ তার চাচা হামজার নেতৃত্বে ৩০ জনের একটি দলকে প্রথমবার পাঠায় একটি বাণিজ্য কাফেলার উপর হামলা করতে, যার নেতৃত্বে ছিলো আবু জাহেল এবং কাফেলায় ছিলো ৩০০ জন কোরাইশ। কিন্তু জুহিনা গোত্রের এক দলপতির কারণে মুসলমানরা এই হামলা করতে না পেরে মদীনায় ফিরে আসে। এটি ছিলো ৬২২ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাস। এর একমাস পর আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে ২০০ জন কোরাইশের আরেকটি দল সিরিয়া থেকে মক্কা ফিরছিলো, মুহম্মদ ৬০ জনের একটি দলকে তার উপর হামলার জন্য পাঠায়। কিন্তু প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হওয়ায় মুসলমানরা হামলা না করেই ফিরে আসে। এর একমাস পর নবী আরেকটি দলকে হামলার জন্য পাঠায়, কিন্তু তারা গিয়ে দেখে কোরাইশরা অনেক আগেই সেই স্থান ছেড়ে চলে গেছে, তারা খালি হাতেই ফিরে আসে।


পরপর তিনটি অভিযান ব্যর্থ হওয়ায় মুহম্মদ নিজেই মাঠে নামে এবং মাস দুয়েক পর একটি বাহিনী নিয়ে ‘আল আবোয়া’ নামের এক জায়গা পর্যন্ত ধাওয়া ক’রে কোরাইশদের বাণিজ্য কাফেলাকে ধরতে না পেরে ফিরে আসে। এর পরের মাসে মুহম্মদ আবারও ২০০ জনের একটি বাহিনী নিয়ে হামলার পরিকল্পনা করে, কিন্তু মুসলমান বাহিনী পৌঁছার আগেই কোরাইশরা বিপদসীমা অতিক্রম করে চলে যায়, মুহম্মদকে আবারও ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়। এর ২/৩ মাস পর মুহম্মদ আবারও দেড় দুইশজনের একটি বাহিনী নিয়ে হামলার পরিকল্পনা করে; কারণ, মুহম্মদের কাছে খবর ছিলো আবু সুফিয়ান একটি কাফেলা নিয়ে মক্কা থেকে সিরিয়ার দিকে যাত্রা করেছে, কিন্তু মুহম্মদ তার গতিরোধ করার পূর্বেই সুফিয়ান মদীনার সীমান্ত পার হয়ে চলে যায়। আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে কোরাইশদের এই কাফেলা যখন সিরিয়া থেকে মক্কা ফিরছিলো তখনই সংঘটিত হয় বদরের যুদ্ধ।সুফিয়ানের এই দল ফেরার পূর্বেই মুহম্মদ আবার কয়েকজনকে নাখালা নামক স্থানে অন্য একটি কাফেলায় হামলা করার জন্য পাঠায়। এই নাখালা ছিলো মক্কার দক্ষিণ দিকে যাওয়ার বাণিজ্য পথ। তারা সেখানে পৌঁছে মাথার চুল কামিয়ে নিরীহ তীর্থযাত্রী সেজে অপেক্ষা করতে থাকে, যেন তারা মক্কা থেকে হজ সেরে এখানে একটু বিশ্রাম করছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণ দিক থেকে বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে কয়েকজন কোরাইশ নাখালায় এসে উপস্থিত হয় এবং তারা মুসলমানদের চালাকি বুঝতে না পেরে ঐ স্থানেই বিশ্রাম ও রান্না বান্নার আয়োজনা করতে লাগে। মুসলমানরা তাদের উপর তখনই হামলা করবে কি না, তা নিয়েই দ্বিধায় পড়ে যায়; কারণ সেদিন ছিলো হিজরি সালের রজব মাসের শেষ দিন। ইসলামের আগে থেকেই আরবে রজব সহ চার মাস যুদ্ধ ও রক্তপাত নিষদ্ধ ছিলো, কিন্তু এই বিধান মানলে এই দল হাত ছাড়া হয়ে যাবে এবং এত পরিশ্রম বৃথা হয়ে যাবে, তাই মুসলমানরা চার জনের এই ক্ষুদ্রদলকে আক্রমন ক’রে একজনকে হত্যা করে, দুইজনকে বন্দী করে এবং একজন পালিয়ে যায়। যথাসময়ে মুসলমানরা দুজন বন্দী ও তাদের সম্পদ নিয়ে, ইসলামের ভাষায় গনিমতে মাল নিয়ে মদীনায় উপস্থিত হয়। রজব মাসে রক্তপাত করার জন্য মুহম্মদ প্রথমে তাদেরকে মৃদু ভর্তসনা করে, কিন্তু তারপরও গনিমতে মাল মনে হয় মুহম্মদকে খুশিই করেছিলো; তাই একটি আয়াত নামিয়ে নিষিদ্ধ মাসে মুসলমানদের এই রক্তপাত করাকে জায়েজ করে দেয়। আয়াতটি এরকম-


“লোকেরা জিজ্ঞেস করেহ হারাম মাসে যুদ্ধ করা কী ? উত্তরে বলে দাও- এ মাসে যুদ্ধ করা বড়ই অন্যায়, কিন্তু তা হতে আল্লাহর নিকট অধিক বড় অন্যায় হচ্ছে, আল্লাহর পথ হতে লোকদেরকে বিরত রাখা, আল্লাহকে অস্বীকার ও অমান্য করা, আর আল্লাহ বিশ্বাসীদের জন্য ‘মসজিদে হারাম’(কাবা) এর পথ বন্ধ করা এবং মসজিদুল হারাম এর অধিবাসীদেরকে সেখান থেকে বহিষ্কার করা। আর ফিতনা ও বিপর্যয় রক্তপাত হতেও জঘন্য অপরাধ।– (কোরান, ২/২১৭)


অথচ এর আগে মুসলমানদের জন্য নির্দেশ ছিলো,


“অতএব হারাম মাস যখন অতিবাহিত হয়ে যাবে, তখন মুশরিকদের হত্যা কর যেখানেই তাদের পাও এবং তাদের ধরো, ঘেরাও করো এবং তাদের প্রতিটি ঘাঁটিতে তাদের খবরাখবর নেওয়ার জন্য শক্ত হয়ে বসো। অতঃপর তারা যদি তওবা করে, নামায কায়েম করে ও যাকাত দেয়, তাহলে তাদেরকে তাদের পথ ছেড়ে দাও।”- (কোরান, ৯/৫)


এটা হলো ইসলামের বড় বৈশিষ্ট্য, যখন যা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা কোরান হাদিসে রয়েছে। উদারপন্থী মুসলমানদের জন্য যেমন রয়েছে,


“তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার”, ( কোরান, ১০৯/৬)


তেমনি জঙ্গীদের জন্য রয়েছে,


“ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম চাইলে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না।”- ( কোরান, ৩/৮৫)


যা হোক, নাখালা থেকে প্রাপ্ত এই গনিমতের মাল ছিলো ইসলামের ইতিহাসে মুসলমানদের প্রথম আয়। মুহম্মদ আয়াত নামিয়ে আগে থেকেই তার ২০% কমিশন ঠিক করে রেখেছিলো। তাই সে পাঁচভাগের এক ভাগ নিজের জন্য রেখে বাকি সম্পত্তি অন্যদের মধ্যে বন্টন করে দেয়।


বর্তমানে যদি কেউ এই ধরণের কমিশন খায় তাকে আপনারা কী বলবেন ? আমি তো তাকে ডাকাত সর্দার ই মনে করি। কিন্তু মুসলমানরা এই লোককে নিজেদের নবী মানে, সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ হিসেবে পূজা করে।


সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ইসলামের ইতিহাসের এসব ঘটনা মুসলমানরা আর বিশ্বাসই করে না, বলে সবই বানানো। কিন্তু এসব ঘটনা সত্য কিনা, তা যাচাই করার মানসিকতা ও সাহস পর্যন্ত মুসলমানদের নেই। এতে তাদের আরও ভয়, এতে যদি ঈমান নষ্ট হয়ে যায়! তাহলে তো বেহেশতের হুর গেলমান যাবেই, সেই সাথে দোযখের আগুন। অতএব দরকার কী বাবা, কোরান হাদিসে যা আছে থাক, আমি বিশ্বাস করি নবী কিছু খারাপ করতে পারে না, আর এটাই চিরসত্য। আরে বলদা, কোরান হাদিস রিসার্চ করতে গিয়ে যদি ইসলাম তোর কাছে মিথ্যা প্রমানিত হয়, তাহলে তো তোর কাছে দোযখ বেহেশতও মিথ্যা প্রমানিত হবে, তাহলে আর দোযখের ভয় কোথায় ? আর যদি কোরান হাদিস সত্য প্রমানিত হয়, তাহলেও তোর ঈমান মজবুত হবে। কোরান হাদিস ঘাঁটতে তোর এত ভয় কিসের ?


মুসলমানদের এই মনোভাব থেকে থেকে এটা প্রমান হয় যে, ইসলামকে অবিশ্বাস করেই মুসলমানরা এখন টিকে আছে, তাহলে তোরা আর মুসলমান থাকলি কোথায় ? যেসব মুসলমান মনে করছে এসব ঘটনা আমি বানিয়ে লিখছি, তাদের কাছে বলছি, উপরে যে সব আয়াত উল্লেখ করেছি, সেগুলো কোন প্রেক্ষাপটে নাজিল হয়েছিলো ক্ষমতা থাকলে তার ব্যাখ্যা দে। তোরা কমেন্টে মাঝে মাঝে বলিস, আমি ইসলামের কতটুকু জানি, আর কোরানের কী বুঝি ? আমি যদি সঠিক না জানি তাহলে আমাকে সঠিক জানানোর বা বোঝানোর দায়িত্ব তোদের, এই পোস্টে কোরান হাদিসের যে বাণীগুলোর উল্লেখ করেছি এবং আরো করবো সেগুলোর ব্যাখ্যা দিয়ে আমাকে বুঝা। না হলে আমার কাজ আমি করেই যাবো আর প্রতিদিন ইসলামের দালানে নতুন কোনো ইট যুক্ত হতে তো দেবোই না, উল্টো তা থেকে একটি একটি করে ইট খসাবো। কারণ, আমি মনে করি আমার এক একটি লেখা, একবার পোস্ট করার ফলে কমপক্ষে একজন অমুসলিমকে ইসলামের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারি এবং একজন মুসলমানের চিন্তাধারাকে পরিবর্তন করতে বাধ্য করতে পারি বা তাকে অস্থির করে তুলতে পারি, এটাই আমার ধর্মযুদ্ধ।


যা হোক, দুজন বন্দীর জন্য মক্কা থেকে লোক এলে মুহম্মদ তাদের প্রত্যকের জন্য ১৬০০ দিরহাম করে দাবী করে। বর্তমানের হিসেবে এটা কী পরিমাণ টাকা একবার চিন্তা করুন। একজনের পরিবার তাকে ঐ টাকা দিয়ে মুক্ত করে নিয়ে যায়, আর অন্যজনের পরিবারের সেই সামর্থ্য না থাকায় সে বাধ্য হয়ে মুসলমান হয়ে মদীনাতেই থেকে যায়। কেননা, মুসলমান না হলে তাকে হত্যা করা হতো। এখন আপনাদেরকে প্রশ্ন করছি, বর্তমানে মুক্তিপণ আদায় করে কারা ? নিশ্চয় অপহরণকারী বা কিডন্যাপাররা ? আর ইনিই মুসলমানদের নবী ও সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ, যার কাজ ছিলো অমুসলিমদের ধন সম্পদ লুঠপাট করে পাওয়া অর্থ ও অপহরণ করে আনা বন্দীদের মুক্তিপণ আদায় করে খাওয়া। শুধু তাই নয়, জিহাদে ধরে আনা অমুসলিম নারীদেরকে ধর্ষণ করা এবং তাদেরকে যৌনদাসী হিসেবে বাজারে বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ খাওয়াও ইনি এবং এনার সঙ্গীসাথীদের, মুসলমানদের ভাষায় সোনার মানুষ সাহাবীদের মহান(!) কাজের অংশ ছিলো, যার উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে ইসলাম। নিশ্চয় ইসলাম খালি মহান নয়, অনেক বড় মহান ধর্ম।


এখানে আর একটা বিষয় খেয়াল করবেন, মক্কার লোকজন কিন্তু তাদের বিজনেস নিয়ে ব্যস্ত ছিলো; আর মুহম্মদের লোকজন ব্যস্ত ছিলো তাদের সেই সম্পত্তি লুঠপাটের চিন্তা ও তার বাস্তবায়নের ব্যাপার স্যাপার নিয়ে। কোরান হাদিসের একটা বাণীতেও এই প্রমান নেই যে, মদীনার মুসলমানরা কোনো দিন কোনো ব্যবসা করেছে বা বাণিজ্য কাফেলায় গিয়েছে, তাহলে মুহম্মদ এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গোদের পেশা কী ছিলো ? অবশ্য যাদের চিন্তাভাবনা এবং কাজ ই ছিলো অন্যের সম্পত্তি লুঠপাট করে খাওয়া, তাদের আর ব্যবসা করার দরকার কী ?


যা হোক, নাখালার ঐ ঘটনার পর মক্কা ও মদীনার মধ্যে শত্রুতা অনেক বেড়ে গেলো। কোরাইশরা, মুহম্মদকে শিক্ষা দেবার জন্য সিরিয়ায় সুফিয়ানের কাছে সংবাদ পাঠালো, এই সংবাদ পৌঁছলো মদীনায় মুহম্মদের কাছেও, মুহম্মদও তাই এবার মুসলমানদেরকে শুধু যুদ্ধ নয়, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত করতে লাগলো, যাতে জিহাদ করতে গিয়ে কেউ মারা গেলেও কারো কোনো আফসোস না থাকে বা মুহম্মদকে কোনো প্রশ্নের মুখে পড়তে না হয়। কোরানের সেই আয়াত গুলো এরকম-


“প্রকৃতপক্ষে মুমিন তো তারাই, যারা আল্লা ও তার রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, অতঃপর কোনো সন্দেহ করে না এবং নিজের জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে। তারাই সত্যবাদী-সত্য নিষ্ঠ লোক।- ( কোরান, ৪৯/১৫)


এখানে বলে দেওয়া হলো প্রকৃত মুসলমান তারাই, যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে। এরা যাতে মৃত্যুকে ভয় না পায়, তার জন্য বলা হলো নিচের এই কথা-


“প্রকৃত কথা এই যে, আল্লাহ তায়ালা মুমীনদের নিকট হতে তাদের হৃদয় মন এবং মাল সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে খরিদ করে রেখেছেন। তারা আল্লার পথে মরে ও মারে।”- (কোরান, ৯/১১১)


"যারা আল্লার পথে নিহত হয়েছে, তাদেরকে মৃত মনে করো না। প্রকৃতপক্ষে তারা জীবিত, তারা আল্লার কাছ থেকে জীবিকা পেয়ে থাকে।”- (কোরান, ৩/১৬৯)


“আর আল্লার পথে যারা নিহত হয়, তাদেরকে মৃত বলো না, প্রকৃতপক্ষে তারা জীবন্ত, কিন্তু তাদের জীবন সম্পর্কে তোমাদের কোনো চেতনা হয় না।” - ( কোরান, ২/১৫৪)

এবং ফাইন্যালি বলা হলো নিচের এই কথা-


“তোমরা কি মনে করেছো, তোমরা এমনিতে বেহেশতে প্রবেশ করবে , যতক্ষণ না আল্লাহ তোমাদের মধ্যে কে জিহাদ করেছে, আর কে করে নি, তা না জানছেন ?" - (কোরান, ৩/১৪২)


এর মাধ্যমে বলে দেওয়া হলো শুধু আল্লা ও রসূলকে বিশ্বাস করে ইসলামে ঈমান এনে মুসলমান হলেই চলবে না, জিহাদেও যেতে হবে, না হলে কেউ বেহেশতে ঢুকতে পারবে না। আবার আল্লার পথে জিহাদ করে মরাই যে মুসলমানদের পুন্যের কাজ সেকথাও বলা হলো নিচের এই আয়াতে-


“…আর যেসব লোক আল্লাহর পথে নিহত হবে, আল্লাহ তাদের আমল সমূহকে কখনোই নষ্ট ও ধ্বংস হতে দেবেন না।”- (কোরান, ৪৭/৪)


এবং এই জিহাদে নিহতরাই যে শুধু জান্নাতে যাবে, সেটা আবারও মনে করিয়ে দেওয়া হলো নিচের এই আয়াতে-


“এবং তাদেরকে সেই জান্নাতে দাখিল করাবেন, যে বিষয়ে তাদেরকে অবহিত করিয়েছেন।”- (কোরান, ৪৭/৬)


এবং জিহাদীদের মর্যাদা ই যে আল্লার কাছে সর্বোচ্চ সেই কথা বলে দেওয়া হলো নিচের এই আয়াতে,


“যারা ঈমান এনেছে, দেশত্যাগ করেছে এবং আল্লাহর রাহে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে জিহাদ করেছে, তাদের বড় মর্যাদা রয়েছে আল্লাহর কাছে, আর তারাই সফলকাম।”- (কোরান, ৯/২০)


এইভাবে একের পর এক আয়াত নামিয়ে মুসলমানদেরকে পরম উৎসাহে মরার জন্য প্রস্তুত করে বদরের যুদ্ধের জন্য মুহম্মদ ৩১৩ জন সৈন্য, ৭০টি উট এবং ২ বা ৩ টি ঘোড়া নিয়ে মদীনা ত্যাগ করলো ৬২৩ খ্রিষ্টা্ব্দের ৮ জানুয়ারি। তখন ছিলো রমজান মাস। যাত্রার ২/৩ দিন পর -উপবাসী দুর্বলদের দ্বারা যুদ্ধ হয় না- বলে মুহম্মদ প্রথমে রোযা ভাঙলো এবং তারপর সবাইকে রোযা ভাঙতে বললো, সেই থেকে জিহাদের সময় মুসলমানদের রোযা রাখা নিষেধ।


প্রকৃতপক্ষে বদর একটি কূপের নাম এবং এই কূপ সংশ্লিষ্ট এলাকার নামই বদরের প্রান্তর। এই এলাকা মদীনা থেকে ৩০ মাইল ও মক্কা থেকে ১২০ মাইল দূরে। মুহম্মদ এই বদর প্রান্তরের কাছাকাছি কোনো এক জায়গায় অবস্থান নিয়ে দুজনকে সিরিয়ার দিকে পাঠায় সুফিয়ানের কাফেলার অবস্থান জানার জন্য। এই দুই জন, জুহিনা গোত্রের দলপতি, যার জন্য মুহম্মদের পাঠানো প্রথম অভিযান ব্যর্থ হয়েছিলো, তার বাড়িতে গিয়ে উঠে এবং কয়েক ঘন্টা পর যখন সংবাদ পায় যে, কাফেলা আসছে, তখন তারা সেই সংবাদ মুহম্মদকে দেওয়ার জন্য দ্রুত সেই স্থান ত্যাগ করে।


কিছু পরে সুফিয়ানও তার বাণিজ্য কাফেলাসহ জুহিনা গোত্রের ঐ দলপতির কাছে উপস্থিত হয় এবং জিজ্ঞেস করে জানতে পারে যে দুজন লোক এসেছিলো তারা একটু বিশ্রাম নিয়ে জলপানি খেয়ে চলে গেছে। মুহম্মদের কারণে বছর খানেক ধরেই এই এলাকা কোরাইশদের জন্য নিরাপদ ছিলো না। তাই সুফিয়ান, কাফেলা ছাড়াই সামনে এগিয়ে বোঝার চেষ্টা করে যে সামনে কোনো বিপদ অপেক্ষা করছে কি না এবং বদরের কূপ পর্যন্ত গিয়ে সুফিয়ান উটের তাজা মল এবং তার মধ্যে মদিনায় উৎপন্ন খেজুরের বিচি দেখতে পেয়ে নিশ্চিত হয় যে আশে পাশেই কোথায় মুহম্মদ লুকিয়ে আছে, সঙ্গে সঙ্গে সে একজনকে দিয়ে মক্কায় এই খবর পাঠায় যে, বদরের প্রান্তরে মুহম্মদ তার বানিজ্য কাফেলা আক্রমনের জন্য অপেক্ষা করছে, দ্রুত যেন সেখানে সাহায্য পাঠানো হয়, অন্যদিকে সে নিজে বাণিজ্য কাফেলা মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়।


ইতোমধ্যে মক্কা থেকে কোরাইশদের সৈন্য সামন্ত বদরের প্রান্তরে এসে পৌঁছায় এবং সুফিয়ানের একজন দূত এসেও এই খবর দেয় যে কাফেলা নিরাপদ স্থানে পৌঁছে গেছে। এরপর কোরাইশরা মিটিংএ বসলো এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যে, এরপর মক্কায় ফিরে যাওয়া হবে, না মুহম্মদের মোকাবেলা করা হবে ? নাখালায় মুহম্মদের হামলায় ১ জন খুন, তাদের বাণিজ্য কাফেলা লুঠ ও দুজনকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোরাইশরা মুহম্মদের উপর ক্ষেপেই ছিলো, তাছাড়া এই পরিস্থিতিতে কিছু না করে মক্কায় ফিরে গেলে মুহম্মদের লোকজন বলবে যে, কোরাইশরা ভয় পেয়ে ফিরে গেছে, তাই মুহম্মদকে মোকাবেলা করা হবে বলেই সিদ্ধান্ত হলো এবং বাণিজ্য কাফেলার উপর ডাকাতি বন্ধ করতে মুহম্মদকে উচিত শিক্ষা দেওয়ারও দরকার ছিলো বলে সবাই মনে করলো। ফলে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়লো।


অন্যদিকে মুহম্মদ সংবাদ পেলো যে, যে বাণিজ্য কাফেলা লুটের জন্য তারা এসেছিলো, সেই বাণিজ্য কাফেলা ইতোমধ্যেই নিরাপদ স্থানে পৌঁছে গেছে, কিন্তু তার বিপরীতে কোরাইশদের এক বিশাল বাহিনী তাদেরকে মোকাবেলা করতে এগিয়ে আসছে। এরপর কী করা হবে ভাবতে ভাবতে যুদ্ধ করা হবে বলেই সিদ্ধান্ত হলো এবং মুহম্মদ তার বাহিনী নিয়ে বদর প্রান্তরের উপস্থিত হলো।


বদরের প্রান্তর তিন দিক পাহাড় দিয়ে ঘেরা এবং মুহম্মদ যে দিক থেকে এসেছিলো সেটা পূর্বদিক, আর কোরাইশরা ছিলো পশ্চিম দিকে। যে যার দিকে শিবির ফেললো। মুহম্মদের দিকে ছিলো ৩১৩ জন সৈন্য এবং কোরাইশদের দিকে প্রায় ১ হাজার জন। মুহম্মদের শিবিরের পেছনে ছিলো একটি ক্ষীণ ঝর্ণাধারা, কয়েকটি বড় বড় গর্তে সেই জল জমা হতো এবং তারপর একটি ছোটনালা দিয়ে সেই জল প্রবাহিত হয়ে চলে যেতো। মুহম্মদ প্রথমে সেই ঝর্ণা কব্জা করলো এবং জলের নালার দিক ঘুরিয়ে দিয়ে অন্যদিকে প্রবাহিত করে দিলো যাতে কোরাইশরা সহজে জল না পায় আর জল নিতে হলে তাদেরকে মুহম্মদের শিবিরের কাছে আসতে হয়। বদর প্রান্তরের পূর্বদিকটা ছিলো বালুময় এবং পশ্চিম দিক ছিলো শক্ত মাটি। যুদ্ধ শুরু হবে পরদিন সকালে, তাই একজন বাদে মুহম্মদের সব লোকজন খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমিয়ে প’ড়ে নিজেদের শক্তি সঞ্চয় করলো, আর অন্যদিকে নিজেদের জয় নিশ্চিত জেনে কোরাইশরা সারা রাত আনন্দ ফূর্তি করে কাটিয়ে নিজেদের শক্তির ক্ষয় করলো।


রাতে এক পশলা বৃষ্টি হলো, এতে মুহম্মদের শিবিরের দিকের বালি দেবে গিয়ে শক্ত হলো আর কোরাইশদের দিকের শক্ত মাটি ভিজে পিছলা হয়ে গেলো। ভোর বেলা উঠেই মুহম্মদ বদরের কূপ ও জলের উৎস ক্ষীণ ঝর্ণাধারা নিজেদের দখলে নিলো এবং কোরাইশদের জল নেওয়া বন্ধ করে দিলো; কেরাইশরা এই বিষয়টা কখনো স্বপ্নেও ভাবতে পারে নি যে, মুহম্মদ তাদের জল নিতে দেবে না; ফলে, জলের অভাবে তারা কাহিল হয়ে পড়লো, এরপর যে দুই তিন জন জোর করে জল নেওয়ার চেষ্টা করলো মুসলমানরা তাদেরকে সেখানেই হত্যা করলো । সকাল বেলা যুদ্ধ শুরু হলে কোরাইশরা পশ্চিমদিকে থাকায় সূর্যের আলোতে তাদের চোখ ধাঁদিয়ে যেতে লাগলো, ফলে ঠিক মতো তীর ছুঁড়তেও পারলো না, অন্যদিকে মুসলমানদের এই সমস্যা না হওয়ায় তারা ঠিক মতোই তীর ছুঁড়ে জবাব দিতে লাগলো।


একপর্যায়ে দ্বন্দ্ব যুদ্ধ শুরু হলে সকাল থেকে জল না খাওয়ায় কোরাইশরা সহজেই পরাজিত ও নিহত হতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়, কিন্তু পূর্ব দিক থেকে প্রবল ঝড় উঠায় বালি গিয়ে কোরাইশদের চোখে মুখে ঢুকে যায়, এতে কোরাইশদের পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায়। এই ধুলি ঝড় নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে অনেক অলৌকিক কাহিনী প্রচলিত আছে, কেউ বলে ফেরেশতারা সেই ধুলার মধ্যে এসে যুদ্ধ করেছিলো ইত্যাদি ইত্যাদি; কিন্তু বাস্তব ব্যাপার হচ্ছে, সেই দিনের সকল প্রাকৃতিক ঘটনা গিয়েছিলো মুসলমানদের পক্ষে আর কোরাইশদের বিপক্ষে, আর জলের উৎস নিজেদের দখলে রেখে, কোরাইশদের জল না দিয়ে মুসলমানরা যুদ্ধটা জিতা খুব সহজ করে নিয়েছিলো।


অনেকে জানেন কারবালা প্রান্তরে, এজিদ পানি বন্ধ করে দিয়ে মুহম্মদের বংশধরদেরকে মেরেছিলো। এ নিয়ে মুসলমানদের ধিক্কার ও ছি ছিক্কারের ও সমালোচনার শেষ নেই। এজিদ পাষাণ, নিষ্ঠুর আরো কত কী ? কিন্তু এই শিক্ষাটি এজিদ নিয়েছিলো বদরের যুদ্ধ থেকেই এবং মুসলমানদের কাছ থেকেই। কারবালায় ঘটনায় এজিদের পানি না দেওয়ার ইতিহাস অনেক মুসলমানের কাছে শুনতে পাবেন, কিন্তু বদর প্রান্তরে মুহম্মদের পানি বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা কোনো মুসলমানের কাছে শুনতে পাবেন না। এমনকি বদর যুদ্ধ কেনো হয়েছিলো সেই ঘটনাও কোনো মুসলমানের কাছে কখনোই শুনতে পাবেন না। শুনতে পেলেও শুধু এটুকুই পাবেন যে, বদরের যুদ্ধ ছিলো মুসলমানদের আত্মরক্ষার যুদ্ধ; কিন্তু খন্দকের যুদ্ধ ছাড়া ইসলামের ইতিহাসের কোনো যুদ্ধই আত্মরক্ষার যুদ্ধ ছিলো না, সবই ছিলো পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া বাদিয়ে মুসলমানদের আক্রমনাত্মক যুদ্ধ।


যা হোক এই যুদ্ধে, কোরাইশদের ৪৯ জন এবং মুসলমানদের ১৪ জন মারা যায়। গনিমত হিসেবে মুসলমানরা পায় ১১৫টি উট, ১৪টি ঘোড়া, এবং প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও অন্যান্য জিনিস এবং কিছু লোককে তারা বন্দী করেও এনেছিলো। যাদেরকে মক্কার লোকজন পরে ১ হাজার থেকে ৪ হাজার দিনার দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়, এভাবে মুহম্মদের ডাকাতি ব্যবসা আরো ফুলে ফেঁপে উঠে।


আমি ইসলামের বিরুদ্ধে কখনোই লিখতাম না, মুহম্মদ যদি জিহাদের নামে এই ডাকাতি না করতো, সেসব থেকে সে ২০% কমিশন না খেতো, জিহাদের নামে অমুসলিম নারীদেরকে ধরে এনে ধর্ষণ শেষে ক্রীতদাসী হিসেবে বাজারে বিক্রি না করতো, শিশুদেরকে দাস না বানাতো এবং শুধুমাত্র তাকে না মানার জন্য কাউকে যদি খুন না করার নির্দেশ দিতো। এসবই আসলে ইসলাম এবং ইসলামের ইতিহাসের ৬২২ থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত এগুলো ছাড়া আর ইসলামে কিছুই নেই। মাঝে মাঝে এগুলো কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়ে, কিন্তু সুযোগ পেলেই যে এগুলো জেগে উঠে তার প্রমান ১৯৪৬ সালের কোলকাতা, নোয়াখালি, ৪৭ এ পুরো পশ্চিম পাকিস্তান এবং ৫০ এ পুরো পূর্বপাকিস্তানের হিন্দু হত্যা, নির্যাতন আর দেশ থেকে বিতাড়নের ঘটনাগুলো। আর লেটেস্ট প্রমান হচ্ছে ইরাক সিরিয়া জুড়ে আই এস এর উত্থান ও বাংলাদেশের ঢাকার এক রেস্তোরায় ২০ খুন, শ্রীলঙ্কায় ২৫৯ জন হত্যাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বর্বরতা। এইসব বর্বরতা কখনোই থামবে না, যতদিন পৃথিবীতে কোরান হাদিস ও তাতে অন্ধ বিশ্বাসী মুসলমানরা আছে। কারণ, কোরান হাদিসের অন্ধকার থেকেই তৈরি- আফগানিস্তানের আল কায়দা, সোমালিয়ার আল শাবাব, পাকিস্তানের লস্কর ই তৈয়বা, জোশ ই মুহম্মদ, নাইজেরিয়া- কেনিয়ার বোকো হারাম, বাংলাদেশের- হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি, আনসারউল্লাহ বাংলা টিমসহ সারা পৃথিবীর যত জঙ্গীসংগঠন আছে সব।আরএকটা ব্যাপার খেয়াল করবেন, পৃথিবীতে জঙ্গী সংগঠন শুধু মুসলমানদের ই আছে এবং জঙ্গী বলতে শুধু মুসলমানদেরকেই বোঝায়, আর অন্য কোনো ধর্ম ও জাতির লোককে নয়।


জয় হিন্দ।